এটি বাংলা ছোট গল্প “কন্যাদান”-এর চতুর্থ অংশ। এর আগে একের পর এক প্রস্তাব এসেছে শ্রাবণীর জীবনে—কখনো শহরের চাকুরে ছেলে, কখনো জমিদার ঘরের সন্তান, আবার কখনো দূরের আত্মীয়ের তরফ থেকে। প্রতিটি প্রস্তাব তাকে আরও অস্থির করেছে, আরও সংকীর্ণ করেছে তার স্বপ্নের পথ। জানুন কি হবে এবার শ্রাবনীর সাথে ?????
কন্যাদান: চতুর্থ পর্ব
আশ্বিন মাসে এলো আরেকটি প্রস্তাব। এবার দূরের গ্রামের এক স্কুলশিক্ষকের পরিবার থেকে। তারা শ্রাবণীর বাবাকে লিখে জানালেন, “আমাদের কোনো চাহিদা নেই, শুধু চাই স্নেহভরা একটি মেয়ে, যিনি সংসার সামলাবেন।”শ্রাবণীর মনে হলো, এই প্রস্তাবটা অন্যদের মতো নয়। এখানে নেই জমিজমার গরিমা, নেই শহরের চাকরির অহংকার, নেই সাজানো উপহার কিংবা অদ্ভুত শর্ত। কেবল সহজ সরল কথায় ভরসা।বাবা তবুও নীরব। মা ঠান্ডা চোখে শুনলেন সবকিছু। শ্রাবণী মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল—একদিকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা, অন্যদিকে অদৃশ্য শেকল। স্কুলশিক্ষকের সরল প্রস্তাবে যেন আশার আভাস আছে, কিন্তু সেটিও ছিল এক নতুন খাঁচার ছায়া।

আশ্বিন মাসের এক শান্ত দুপুরে স্কুলমাস্টারের পরিবার এলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা, বাবা আর এক মামা। তারা খুব সাধারণ পোশাকে, হাতে সামান্য মিষ্টি নিয়ে শ্রাবণীর বাড়িতে প্রবেশ করলেন। কোনো ধুমধাম, কোনো বাড়তি সাজসজ্জা ছিল না।বসে উঠতেই মাস্টারমশাইয়ের বাবা বললেন, “আমাদের কোনো দাবি নেই। আমরা শুধু চাই, সংসারটা মিলেমিশে চলুক।”শ্রাবণীর বাবা নীরবে মাথা নাড়লেন, কিছুক্ষণ পরে বললেন, “মেয়েটা ছোট থেকে ছবি আঁকতে ভালোবাসে। এখনো পড়াশোনার ইচ্ছে আছে। এসব ব্যাপারে আপনারা কী ভাবেন?”মাস্টারের মা শান্ত গলায় উত্তর দিলেন, “ও যদি আঁকতে ভালোবাসে, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমাদের ছেলে স্কুলে পড়ায়, সেও বই পড়া আর জ্ঞানচর্চাকে মূল্য দেয়।”শ্রাবণীর মা ঠান্ডা চোখে সব শুনলেন, তবে বললেন, “আমরা শুধু চাই, মেয়েটা যেন সম্মান পায়। তার উপর চাপ যেন না পড়ে।”মাস্টারের মামা হেসে বললেন, “আমাদের বাড়িতে কারও উপর জোরাজুরি নেই। সংসারটা সহজ সরল। ছেলেটা সকালবেলা স্কুলে যায়, বিকেলে পড়াশোনা করে, বাড়িতে শান্ত পরিবেশ।”শ্রাবণী পাশে বসে সব শুনছিল, বুকের ভেতরে অদ্ভুত টান। প্রস্তাবটা সত্যিই সরল, কিন্তু তার মনের গোপনে প্রশ্ন জেগে উঠল—এবার কি সত্যিই মুক্তি মিলবে, নাকি এও এক নতুন বাঁধন?
আমাদের একটি অন্য মজার গল্প :

যদি আপনার আসে পাশে এমন কোনো মেয়ে থাকে তাহলে তাকে সাহায্য করুন ।
https://devipeethindia.com/ এই ওয়েবসাইট এর কথা বলে ।
1 thought on “কন্যাদান :চতুর্থ পর্ব”