হারিয়ে যাওয়া রুদ্রর দাদা

রুদ্রর দাদা অমিতাভ ছিলেন খুব জ্ঞানপিপাসু মানুষ। ইতিহাস আর পুরনো কাহিনির প্রতি তাঁর ছিল অদম্য টান। গ্রামের বাইরে, জঙ্গলের ভিতর একটা পুরনো জমিদারবাড়ি ছিল — নিশীথ প্রাসাদ। শোনা যেত, রাত গভীর হলেই ওখানে নাকি কারা যেন হাঁটে, জানালায় আলো জ্বলে, আর মাঝে মাঝে এক অদ্ভুত সুর শোনা যায়।একদিন সকালে রুদ্রর মা কাঁদতে কাঁদতে বললেন, “তোর দাদা রাত থেকে নেই, বলেছিল নিশীথ প্রাসাদের রহস্য জানতেই হবে। সঙ্গে একটা পুরনো চাবি ছিল… খুব কৌতূহলী হয়ে গিয়েছিল সেই চাবি নিয়ে।”চাবিটা ছিল রুদ্রদের ঠাকুরদার রেখে যাওয়া, অদ্ভুত কারুকাজ খোদাই করা লোহার তৈরি।রুদ্রর বুক ধকধক করতে লাগল। এত বছর ধরে যা লোককথা বলে শুনে এসেছে, সেই প্রাসাদের রহস্য এবার তাকে নিজেকেই উন্মোচন করতে ।

হারিয়ে যাওয়া রুদ্রর দাদা

রুদ্রর দাদা ও প্রাসাদের অদ্ভুত ছায়া

রাত দশটার সময়, হাতে টর্চ আর দাদার ডায়েরির একটা পাতার ফটোকপি নিয়ে রুদ্র চুপিচুপি বাড়ি থেকে বেরোল। জঙ্গলের পথে হাঁটতে হাঁটতে তার মনে হচ্ছিল কেউ যেন তাকে অনুসরণ করছে। নিশীথ প্রাসাদের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে, তার দাদার কথা মনে পড়ে গেল — “এই দরজা, এই প্রাসাদ… এগুলো শুধু পাথর নয়, এগুলো সময়ের সাক্ষী।”দরজাটা হালকা ঠেলতেই শব্দ করে খুলে গেল। ভেতরে ঢুকে সে দেখল এক লম্বা করিডোর, ধূলায় মোড়া মেঝে, ভাঙা জানালা, আর একেবারে শেষে একটা ছোট দরজা — দরজার গায়ে খোদাই করা,”চাবি যার হাতে, সেই পাবে কালের সত্য”।চাবি ঢুকিয়ে ঘোরাতেই এক মৃদু শব্দ করে দরজাটা খুলে গেল।

রুদ্র আর অমিতাভ মিলে সেই কবিতাগুলো স্থানীয় জাদুঘরে তুলে দিল। গ্রামবাসী বুঝল, প্রাসাদে ভূত নেই — আছে ইতিহাস, আছে গর্ব।আর নিশীথের চাবি?তা আজও রুদ্রর ডেস্কে, যেন তাকে মনে করিয়ে দেয় — কিছু চাবি শুধু দরজা খোলে না, খুলে দেয় অতীতের গল্পও।

রুদ্রর দাদার ডায়েরি ও চূড়ান্ত সত্য

ভেতরে ছোট একটা ঘর — দেয়ালে ঝোলানো ছবি, মাটিতে ছড়ানো কাগজ, আর একটা কাঠের টেবিলে রাখা দাদার সেই চেনা চশমা।হঠাৎই পেছন থেকে এক গলা — “রুদ্র?”রুদ্র চমকে পেছনে ঘুরে দেখে দাদা দাঁড়িয়ে! চোখে বিস্ময়, মুখে ক্লান্তি।অমিতাভ ধীরে ধীরে বলল, “আমি ঠিক জানতাম তুই আসবি। আমি এখানে একটা সত্যের খোঁজে এসেছিলাম। এই প্রাসাদের জমিদার ছিলেন এক বিপ্লবী কবি, যিনি তাঁর সমস্ত বিপ্লবী কবিতা এই ঘরেই লুকিয়ে রেখেছিলেন। ব্রিটিশদের ভয়ে তিনি চাবিটা গোপন করে যান, এবং তাঁর মৃত্যুর পর কবিতাগুলো হারিয়ে যায় ইতিহাস থেকে।”রুদ্র অবাক হয়ে শুনল, “এই কবিতাগুলো শুধু সাহিত্য নয়, ইতিহাস, বিদ্রোহ, এবং বাংলার হৃদয়। এই হচ্ছে আসল গুপ্তধন।”

Check out other short story in Bengali:

https://bangla.riseofthetimelords.com/%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a7%80-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95/

1 thought on “হারিয়ে যাওয়া রুদ্রর দাদা”

Leave a Comment

error: Content is protected !!