কল্যাণপুর নামের গ্রামটি বাইরে থেকে দেখতে যেমন নিরীহ, তার ভেতরের কাহিনি ঠিক ততটাই ভয়ংকর। দিনের বেলা কাঁকনের মতো ঝকমকে সূর্য । মাঠে কাজ করা মানুষ আর মেঠো রাস্তার পাশে বসে থাকা শিশুরা । সব কিছুই যেন এক আদর্শ বাংলার ছবি। কিন্তু রাত নামলেই এক অদৃশ্য ভয়ের ছায়া নামে এই গ্রামে।এখানকার মানুষ একটাই শব্দে সেই ভয়ের পরিচয় দেয়— নিশি
পুরনো সতর্কতা
গ্রামের বয়স্করা আজও বলেন,>
“সন্ধ্যার পর কেউ যদি তোমার নাম ধরে ডাকে, একবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখার আগে ভাববি—ওটা কি সত্যিই মানুষ, না নিশি?”
এই সাবধানবাণী যেন শুধু গল্প নয় ,বরং এক সামাজিক নিয়ম। শহর থেকে ফেরা সায়ন এসব কথা শুনে হেসেই উড়িয়ে দেয় । সে এসেছে তার দিদিমার সঙ্গে কিছুদিন কাটাতে।
“এসব তো গাঁগেঁয়ে মানুষদের ভয় পাওয়ার কথা,” — মনে মনে ভাবে সে।কিন্তু ভয় যে আসল, তা সে বুঝতে পারবে এক রাতেই।
বাঙালি ভূতেদের ক্পঞ্জি
http://Ghosts in Bengali culture – Wikipedia https://share.google/q0bvReTHMmpEN0fP9
অমাবস্যা ও নিশির আগমন
দিনটি ছিল অমাবস্যা, আকাশে একফোঁটা চাঁদের আলো নেই। সন্ধ্যা নামতেই দিদিমা দরজা বন্ধ করে বললেন,
আজ রাতটা ভালো নয় রে সায়ন, আজ নিশির রাত।”সায়ন হেসে বলল, “দিদিমা, আমি তো শহরের ছেলে, এইসব ভূতের গল্পে বিশ্বাস করি না।”কিন্তু রাত ২টোর সময় ঘুমের ভেতর সায়নের কানে ভেসে এল এক পরিচিত গলা—> “সায়ন… আয়… আমি মা… দরজাটা খোল তো…”মায়ের গলা! কিন্তু মা তো কলকাতায় আছেন, এখানে আসেননি!সে বিছানা থেকে উঠে জানলার দিকে এগোল। গলা আবার শোনা গেল—> “আমি মা… ভয় পাবি না… শুধু একবার আয়…”হঠাৎ তার মনে পড়ল দিদিমার কথা—”nishi পরিচিত গলায় ডাকে। যাকে ডাকছে, সে যদি সাড়া দেয়, আর ফেরা হয় না তার।”সায়নের পা যেন হিম হয়ে গেল। সে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে গেলেও খুলল না। ঠিক সেই সময়…
দিদিমা ঘুম ভেঙে ডাক দিলেন, “সায়ন! কি করছিস?”সায়ন কাঁপতে কাঁপতে বলল, “মা আমায় ডাকছে!”দিদিমা তৎক্ষণাৎ জানলায় গঙ্গাজল ছিটিয়ে দিলেন আর বললেন,> “ওটা তোর মা না রে… ওটা nishi! ভালো করে তাকাস, জানলার ছায়ায় কি দেখছিস?”সায়ন চোখ ঘুরিয়ে তাকাল—একজন নারীর ছায়া, কিন্তু তার পা ছিল উল্টো! গোড়ালি সামনের দিকে, আর আঙুল পেছনে!
নিশির চিহ্ন
সকাল হতেই গ্রামের লোকজন পুকুর ঘাটের পাশে দেখতে পেল একজোড়া উল্টো পায়ের ছাপ।এক বৃদ্ধ বললেন,> “কাল রাতে আবার nishi এসেছিল। এবার সায়ন বেঁচে গেল, ভাগ্যিস সে ঘাড় ফেরায়নি।”সেই দিন থেকে সায়নের মন থেকে শহরের অহংকার উঠে গেল। সে বুঝে গেল—নিশির ভয় গল্প নয়, বাস্তব।
Our other stories
1 thought on “নিশি: অমাবস্যার রাতে এক অজানা ডাক |”